৫ম উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনে ৩য় পর্যায়ের ভোটগ্রহণকালে পূর্ব চন্দনাইশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র দখল ও ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা প্রতিহত করার সময় দুর্বৃত্তের ছোঁড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন জেলা পুলিশের কনস্টেবল ফরহাদ হোসেন।

সহকর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেলে পৌঁছেন পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম জনাব নুরেআলম মিনা, বিপিএম (বার), পিপিএম। মূমুর্ষূ কনস্টেবল ফরহাদ হোসেন’কে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স চট্টগ্রাম মেডিকেলে পৌঁছার পূর্বেই মেডিকেল কলেজের পরিচালক মহোদয়, ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ভাস্কুলার ইনজুরি বিভাগের ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে সুচিকিৎসার যাবতীয় কার্যক্রম প্রস্তুত রাখেন। প্রয়োজনীয় রক্ত, ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রীও প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থা করেন।
মুমূর্ষ কনস্টেবল ফরহাদ হোসেন’কে বহনকারী এ্যাম্বুলেন্স চট্টগ্রাম মেডিকেলে পৌঁছলে তাকে রিসিভ করেন সয়ং পুলিশ সুপার মহোদয়। ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা: রিপুরাজ চক্রবর্তী এবং ডা: সাইফুল ইসলাম মুমূর্ষ ফরহাদ হোসেনের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেলের দু’জন ভাস্কুলার সার্জন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছয় ঘন্টার মধ্যে ভাস্কুলার ইনজুরির অপারেশন করা না হলে আহত কনস্টেবলের জীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে মর্মে জানান।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার জনাব নুরেআলম মিনা, বিপিএম (বার) পিপিএম এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন নির্বাচন কমিশন সচিব মহোদয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে তাৎক্ষনিক সামরিক হেলিকপ্টারযোগে বিশেষায়িত হাসপাতাল জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকায় প্রেরণের ব্যবস্থা করেন। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বেসরকারি হেলিকপ্টারও প্রস্তুত রাখেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেলের কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে কনস্টেবল ফরহাদ হোসেন’কে সামরিক হেলিকপ্টারযোগে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও চট্টগ্রাম জেলার টিআই (প্রশাসন) জনাব মীর নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম সেনানিবাস হতে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে প্রেরণ করেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় তেজগাঁও পুরাতন বিমান বন্দরে দু’টি এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখেন এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে অপারেশন টিম প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থা করেন।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে কনস্টেবল ফরহাদ হোসেনের শরীরে দীর্ঘ ৩ ঘন্টাব্যাপী অপারেশন পরিচালিত হয়। বর্তমানে সে আশংকামুক্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে।
জেলার প্রতিটি পুলিশ সদস্যের বিপদে সবার আগে যিনি ছুঁটে যান, পাশে দাঁড়ান তিনি পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম জনাব নুরেআলম মিনা, বিপিএম(বার), পিপিএম। প্রকৃত অভিভাবকের অনন্য দৃষ্টান্ত রাখলেন রাখলেন এবারও। সহকর্মী কনস্টেবল গুলিবিদ্ধের খবরে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছুঁটে গিয়ে সবকিছু প্রস্তুত রাখা, রিসিভ করা হতে হেলিকপ্টার উড্ডয়নের পূর্ব পর্যন্ত সঙ্গে থেকে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করলেন।
চিকিৎসার ব্যয়ভার নিজে গ্রহণ করে চিকিৎসক ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন। সামরিক হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় স্থানান্তরসহ সব কিছুর পিছনে অবদান এই মহৎ অভিভাবকের।
এমন ভরসা আর ভালবাসা পেলে যেকোন পুলিশ সদস্য সর্বোচ্চ আন্তরিকতায় দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত হবে নিশ্চিত।